অরুপ রতণ বালা, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর গলাচিপায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তরমুজ চাষিরা তাই অধিক লাভের স্বপ্ন দেখছেন। তাদের মুখে ফুটে উঠেছে সুখের হাসি। দু’তিন দিনের মধ্যেই ক্ষেতের তরমুজ বিক্রি শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে তরমুজ ক্ষেত কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন। এবার আবাদ বেশি হওয়ায় কৃষকরা অধিক লাভের আশা করছেন। পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। তরমুজ চাষিরা জানান, গতবারের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে তরমুজের বেশ ক্ষতি হয়। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবারের মৌসুমে তরমুজ গাছ লাগানোর পর গত ৪ ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ আঘাত হানে। তবে গাছ ছোট থাকায় তেমন ক্ষতি হয়নি। এখন গাছে তরমুজ বড় হচ্ছে। শিলাবৃষ্টি বা অতিবৃষ্টি না হলে চাষিরা লাভের মুখ দেখবেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার তরমুজ চাষের জন্য উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ১০ হাজার হেক্টর, যা গতবারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমানে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি তরমুজ হয় গলাচিপায়। এ সুযোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দাদন ব্যবসায়ীরা তরমুজ চাষের শুরুতে কৃষকদের দাদন দিয়ে তরমুজ চাষে উৎসাহিত করেন। রতনদীতালতলী ইউনিয়নের তরমুজ চাষি রুহুল তালুকদার বলেন, ‘আমি এবছর ১০ লাখ টাকা খরচ করে ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় এবার লাভের মুখ দেখতে পারমু আশা করি। দুই তিন দিনের মধ্যেই বড় সাইজের তরমুজ কাটতে পারমু।’ পানপট্টি ইউনিয়নের গুপ্তের হাওলা গ্রামের তরমুজ চাষি ইসমাইল হাওলাদার বলেন, ‘আমি এবার তিন একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে আমার ছয় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে গতবার তরমুজ চাষে লোকসান দিয়েছি। কোন ঝড়-বন্যা না হলে আল্লাহর ইচ্ছায় এবার অধিক লাভ করতে পারবো বলে আশা করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজু আকতার বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা তরমুজ চাষিদের পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছি। উপজেলায় এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা শিলা বৃষ্টি বা অতিবৃষ্টি না হলে কৃষকরা লাভবান হবেন।