দক্ষিণাঞ্চল ডেস্কঃ বিয়ের প্রস্তুতিতে কোন কিছুতে কমতি ছিল না। কনের বাড়িতে বর এসেছিলেন হেলিকপ্টারে চড়ে। ধুমধাম বিয়ের আয়োজনে হঠাৎই প্রশাসন হানা। প্রশাসনের অভিযোগ, অপ্রাপ্তবয়স্ক স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করতে এসেছেন বর। প্রশাসনের বাধায় বিয়েটি আর হলো না। বরকে বিদায় নিতে হয়েছে মুচলেকা দিয়ে।
গত শুক্রবার বিকেলে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায়। ১৫ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীর বিবাহ হচ্ছে—এমন খবর পেয়ে তা বন্ধ করেন পূর্বধলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান।
এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর এলাকার আলেক মিয়ার ছেলে শাহজালাল মিয়ার (৩০) সঙ্গে নেত্রকোনার পূর্বধলার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয়। মেয়েটির বাবা ইতালি ও মা দুবাইপ্রবাসী। বিয়ে উপলক্ষে তারা দেশে এসেছেন।
গত শুক্রবার বিকেলে এই বিয়ের কথা ছিল। সকাল থেকে কনের বাড়িতে ধুমধামে চলছিল আয়োজন। বেলা দুইটার দিকে বর হেলিকপ্টারে করে পূর্বধলায় কনের বাড়ির পাশে একটি বিদ্যালয়ের মাঠে নামেন। হেলিকপ্টার ও বরকে দেখতে এলাকার উৎসুক জনতা ভিড় করে। বেলা তিনটার দিকে চলছিল বিয়ের আয়োজন। এর মধ্যে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহি অফিসার। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিয়েটি ভেঙে দেন তিনি। কনের বয়স ১৮ না হওয়া পর্যন্ত এ বিয়ে হবে না এই মর্মে উভয় পক্ষ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শেখ জাহিদ হাসান বলেন, বাল্যবিবাহ চলছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে উপস্থিত হয়ে কনের জন্মনিবন্ধন চাওয়া হয়। এতে তার বয়স উল্লেখ ছিল ১৮। পরে সেটা যাচাই-বাছাই করে জানা যায়, প্রকৃত বয়স ১৫ বছর ৮ মাস। পরে দুই পক্ষের মুচলেকা নিয়ে বিয়েটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।
বিয়ে করতে আসা বর শাজাহান বলেন, ‘আমি বিষয়টা জানতাম না। আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। আমার মা অসুস্থ, তাই মাকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে এসেছিলাম। কনের মা বলেন, তার মেয়ের প্রকৃত বয়স ১৮ বছর। জন্মনিবন্ধনে ভুলবশত কম বয়স উঠেছে।
মেয়েটি যে স্কুলের শিক্ষার্থী, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, মেয়েটি গত বছর জেএসসি পাস করেছে। সে একজন মেধাবী ছাত্রী। বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে আমি আজ তার পরিবারকে বিয়ে দিতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা আমার বারণ শোনেননি।