বাবুগঞ্জ (বরিশাল) সংবাদদাতা: বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসেনের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের সবংর্ধনা অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের যথা স্থানে বসার ব্যবস্থা না করা, বক্তব্য দেয়ার সুযোগ না দেওয়া ও অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবর্তে তাদের সন্তানরা পুরস্কার নিতে আসলে ইউএনও নুসরাত ফাতিমা খারাপ আচরণ করায় ইউপি চেয়ারম্যানরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়য়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাবের কক্ষে এক জরুরি সভা করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল আহম্মেদ আজাদ, ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান হিমু, মশিউর রহমান, দেলোয়ার হোসেন রাঢ়ী। সভায় সিদ্ধান্ত হয় ইউএনও উপজেলা পরিষদের সাথে কোনো বিষয় সমন্বয় না করে নিজের ক্ষমতা প্রভাব খাটিয়ে সকল কাজ করায় উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তথ্য সূত্রে যানা গেছে, গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর বাবুগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদে যোগদান করেন নুসরাত ফাতিমা। যোগদানের পর মৎস্য অভিযানে ব্যাবহৃত ট্রলার পুড়িয়ে আলোচনায় আসেন ইউএনও নুসরাত ফাতিমা। সম্প্রতি উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের এক মুক্তিযোদ্ধার রেকডীয় সম্পত্তিতে জনসার্থের দোহাই দিয়ে নালা নির্মান করেন।
এতে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বাধা দিলে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে মারধর করে ভিডিও ধরন করেন এবং তার সন্তানদেরকে বেআইনি ভাবে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাদন্ড প্রদান করেন। বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম।
পাবলিক পরীক্ষার কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা ক্যালকুলেটর নিয়ে আসলে ইউএনও অর্ধশতাধীক ক্যালকুলেটর ভেঙে ফেলার অভিযোগে উপজেলার রাজনৈতিক মহলে ঝড় সৃষ্টি হয়। এছাড়া গত বছর ১৬ ডিসেম্ব বিজয় দিবস উপলক্ষে ইটভাটাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টানে ভয়ভীতি দেখিয়ে কয়েক লক্ষাধীক টাকা উত্তোলন করে দায়সাড়াভাবে সরকারি প্রোগ্রাম পালন করেন।
কয়েকদিন তিনি ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীনদের জন্য উপহার ঘর নির্মান কাজের দায়িত্ব থাকা এক কমচারী ও ইটভাটা ম্যানেজারকে কোমড়ে রশি দিয়ে কয়েক ঘন্টা বেধে রাখে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের অবমূল্যায়ন করে আসছেন এবং আসন বিন্যাস করেন। গত ২২মার্চ ভূমিহীন-গৃহহিণদের মাঝে ভূমি ও গৃহ হস্তান্তরে অনুষ্ঠানে ইউএনও নুসরাত ফাতিমা সাংবাদিকদের সাথে বিরূপ আচরণ করেন। তিনি এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের বলেন প্রধানমন্ত্রী প্রেস কনফারেন্সে আপনার না আসলেও হয়। গতকাল ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে এই আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম কিবরিয়া টিপুকে সম্মাননা ক্রেস্ট বিতরণ কালে সাংবাদিকরা ছবি তুলতে চাইলে। ইউএনও সাংবাদিকদের বাধা দেন ও সেখান বেড়িয়ে যেতে বলেন। এবং তিনি বলেন আমার লোক রাখা আছে, তারা যে ছবি দিবে সেই ছবি পাঠিয়ে দেব।
গত ১৪মার্চ বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় ইউএনওর বিভিন্ন অনিয়মের প্রস্তাব রেজুলেশনে আনা হলে দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও দুই জন ইউপি চেয়ারম্যান ওই রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেনি। বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে বঙ্গবন্ধুর মুর্যালে নামে বরাদ্দ নিয়ে নিজ বাসভবনের আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র ক্রয় করায় বির্তর্কে পড়েন ইউএনও। যা নিয়েও উপজেলা পরিষদের সাথে দ্বন্দ চরমে হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক দুলাল ও ভাইস চেয়ারম্যান ফারজানা বিনতে ওহাব সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের আয়োজিত প্রতিটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদ্বয়ের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোনো আলোচনা বা সমন্বয় ছাড়াই নিজেই সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
ইউএনও নুসরাত ফাতিমা অভিযোগের বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়ে বলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর সাথে সকল বিষয় আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।