স্টাফ রিপোর্টারঃ সমালোচনার মুখে রাতের আঁধারে কর্মস্থল ত্যাগের পর এখনও আলোচনায় বরিশালের বাবুগঞ্জের সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরত ফাতিমা। দুর্নীতি মামলার মুখোমুখি হতে পারেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন অ্যাডভোকেট এম মাসুম হাওলাদার। ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক এসব বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে তিনি আদালতে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
অ্যাডভোকেট মাসুম জানান, তিনি বাবুগঞ্জ উপজেলার সন্তান। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। ১৫ দিনের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তিনি নুসরত ফাতিমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবেন।
সূত্র জানিয়েছে, চার বছরের শিক্ষা ছুটিতে আমেরিকায় যাচ্ছেন নুসরত ফাতিমা। ঈদুল আজহার আগের মধ্যরাতে অনেকটা গোপনে তিনি বাবুগঞ্জ ছাড়েন। চলতি সপ্তাহেই দেশ ছাড়ছেন তিনি। তবে বিভিন্ন প্রশ্ন দানা বেঁধেছে মানুষের মধ্যে অনেকেই বলছেন তিনি আর দেশে ফিরবেন।
নুসরত ফাতিমা সাংবাদিকদের জানান, পিএইচডি করতে আমেরিকা যাচ্ছেন। এ জন্য গত ১৮ জুন চার বছরের শিক্ষা ছুটি অনুমোদন হয়েছে। তাঁর স্বামীও আমেরিকায় পিএইচডি করছেন। তিনি দাবি করেন, গোপনে বাবুগঞ্জ ছাড়েননি। সহকর্মী সবাই জানতেন। তাছাড়া তিনি দাপ্তরিক দায়িত্ব হস্তান্তর করে গিয়েছেন।
গত বছরের ২৭ আগস্ট বাবুগঞ্জের ইউএনও পদে যোগ দেন নুসরাত। ১১ মাস দায়িত্ব পালনে বিভিন্ন কাজে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি। সর্বশেষ এডিবি ও রাজস্ব ৫০লাখ ৪৬ হাজার টাকা, উপজেলা উন্নয়ন সহায়তা বিশেষ ২টি বরাদ্দে (২০লাখ ৬৬হাজার ও ৩০লাখ টাকা) ৫০লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ৪০লাখ টাকা এতে মোট বরাদ্দ ১কোটি ৪১ লাখ টাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা নিয়ে গত ২৬ জুন উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের সঙ্গে ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান বিরোধে জড়ান। একপর্যায়ে প্রকৌশলীকে ব্যাংকের মধ্যে আটকে হেনস্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার উদ্যোগ নেন।
গত বছরের অক্টোবরে ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর তদারকিতে গিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে একটি ট্রলার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। বছরের শেষভাগে উপজেলা পরিষদে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল সংস্কারের নামে ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা নিয়ে তার বাসার বাথরুম সংস্কার করেন। গত জানুয়ারিতে আরজি কালিকালিকাপুর গ্রামে একটি খাল সংস্কার অভিযানে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমের স্ত্রীকে মারধর এবং তাঁর দুই ছেলেকে বিনা কারণে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠান। এর আগে গত ২৫ ডিসেম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কর্মচারী বাদশা ও ইটভাটার ম্যানেজারকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন তিনি।