বাবুগঞ্জ (বরিশাল) সংবাদদাতা: বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষসহ ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ২৪শে মার্চ বরিশাল বিএম কলেজের কলা ভবন-২ এর একটি কক্ষে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে পরিক্ষায় কারসাজির অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ ওঠে লেখিত পরিক্ষার চলাকালীন সময়ে বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যরা তাদের চুক্তিবদ্ধ প্রার্থীদের প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়েছে এবং লিখে দিয়েছেন নিয়োগ কমিটির সদস্যরা।
নিয়োগ পরিক্ষা ও ভাইভার রেজাল্ট ২৫শে মার্চ দেওয়ার কথা থাকলেও। যা নিয়ে শুরু হয়েছে টালবাহানা। প্রার্থীর অভিভাবকদের মুখ থেকে শোনা যায় টাকার এমাউন্ট বাড়াতেই নাকি শুরু হয়েছে এমন টালবাহানা।
একজন অভিভাবক এবং একজন পরিক্ষার্থী জানান নিয়োগে বড় ধরনের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য হয়েছে। পরিক্ষা কেন্দ্রে অনেকেই নিজের নামও লিখতে পারেনায় তারাও পরিক্ষায় পাস করান হয়েছে। কলেজের গভর্নিং বডির সদস্যার পরিক্ষার চলাকালীন সময়ে অনেকেই বলে দিয়েছে। এবং ভাইভা চলাকালীন সময়ে নিয়োগ কমিটিতে দায়িত্বে থাকা সদস্যরা ছাড়াও বহিরাগত কক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
তারা অভিযোগ করেন বাবুগঞ্জ কলেজের গভর্নিং বডির একজন সদস্য দু’জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন, রুবেল হোসেন (নৈশ প্রহরী) ২ লক্ষ টাকা এবং আরিফ হোসেন (নিরাপত্তা কর্মী) ৪ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে গভর্নিং বডির আরেক সদস্য মহাসিন হোসেন (নৈশ প্রহরী) নামের এক প্রার্থীর থেকে ৩লক্ষ টাকা নেন। গভর্নিং বডির আরেক সদস্য শ্রী রাজিব (পরিচ্ছন্নতা কর্মী) নামের এক প্রার্থীর থেকে ৫লক্ষ টাকা নেন, তবে রাজিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমার টাকা ফেরত দিয়া দেছে। গভর্নিং বডির আরেক সদস্য রানী (আয়া) নামের এক প্রার্থী থেকে ৪ লক্ষ টাকা এবং শিল্প বেগম(পরিচ্ছন্নতা কর্মী) নামের এক প্রার্থী কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নেন।
তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গেছে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করছেন নিয়োগ কমিটির সদস্য মোস্তফা কামাল চিশতি।
কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ শাহে আলম সাংবাদিকদের জানান, ২০১৫ শালেও উপঅধ্যক্ষ নিয়োগে গভর্নিং বডির অনিয়ম বিষয়টি সামনে আসলে মহামান্য হাইকোর্টে শ্যামল মন্ডল নামের এক প্রার্থীকে উপঅধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য রায় দেয়। এ রায়ে বিরুদ্ধে কলেজের শিক্ষক গোলাম হোসেন আপিল করেন। যা এখনও চলমান রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন ২০২২ শালে এড্যহাক কমিটির সভাপতি সিরাজ উদ্দিন আহমেদ একক সিদ্ধান্তে তাকে অনৈতিকভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে সড়িয়ে দেন। এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে অবসর প্রাপ্ত হওয়ার পর ও অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। যা নিয়ে বরিশাল জজকোর্টে সিভিল মামলা চলমান রয়েছে।
বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি সিরাজ উদ্দিন আহমেদ দুর্নীতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমার বিষয়টি জানা নাই, আমি এখন পর্যন্ত রেজাল্টও দেখিনায়। বাবুগঞ্জ কলেজে নিয়োগ দিতে গেলেই সমস্যা হয়। বাবুগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগেও কলেজের শিক্ষক শাহে আলম মামলা দিয়ে রেখেছে। এবং গত মঙ্গলবার শিক্ষকরা ১৩মাসের বেতন ভাতা বকেয়ার করনে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তার রুমে তালা মেরে অবরুদ্ধ করে রাখে, এমন সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হন এবং বাবুগঞ্জে সাংবাদিকরা বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকতার প্রশ্ন তোলেন তিনি।
জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয়ের ডিজির প্রতিনিধি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাছে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি। কেউ যদি ৫ জনার কাছ থেকে কিছু নিয়া থাকে সেটা আমার জানা নাই। আমার এখানে কিছুই নাই, বোর্ডের সদস্যরা সবাই আছে আমরা নিয়ম অনুযায়ী চাকরী দেই। আর পরিক্ষায় অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন রিটার্ন ও ভাইভায় নিয়োগ কমিটির সদস্যরা নাম্বার দেয়, তারপর ভাইভা বোর্ড গড় করে যে ফার্স্ট হবে সেই চাকরি পাবে।