মুলাদী প্রতিনিধি: বরিশালের মুলাদীতে আদালতে মামলা চলাকালীন ও নিষেধাজ্ঞা অবস্থায় আদালতের আদেশ অমান্য করে অন্যের জমিতে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ ওঠে মুলাদী উপজেলার চরকমিশনার গ্রামে আলমগীর ঘরামী তার ভাই জব্বার ও আব্বাস ঘরামী গং শুক্রবার (১৮মার্চ) ভোরে রাতে একদল সক্রিয় ভাড়াটে বাহিনী (৪০-৪৫) জন লোক এনে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ করে এবং জমিতে থাকা বেশ কিছু গাছ কেটে নিয়ে যায়। সকালে ঘরের আংশিক দুুটি চাল (টিনের ছাপড়া) দেয়া অবস্থায় মুলাদী থানার এসআই হুুমায়ুন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ঘরের কাজ স্থাগিত করে দেন।
বর্তমানে এই দাগের জমি নিয়ে ফৌজদারী আইনে (১৪৪/১৪৫) ধারায় বরিশাল বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নং-১/২০২২ মামলাটির তদন্ত ও প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলাদীর অনুকূলে।
তবে এমন দূর দর্শিতা ও হামলার শিকার হতে পারে বলে গত ০৭/০২/২২খ্রিঃ সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিয়াজুর রহমান, মুলাদী। বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছেন।
এবং সহকারী কমিশনার ভূমি সরেজমিন ও কাগজপত্র দেখে স্মারক লিপিতে (০০৮.২০২২-১১১) আরো বলেন বাদী জসিম মোল্লা বিগত ১২/১২/২০১০ খ্রিঃ ৩৮৪৯নং দলিল মূলে মালিক হন। বহু পুর্বে হতে ভোগদখল, গাছপালা, বসতঘর, গোয়ালঘর, কবরস্থান নির্মাণ করিয়া ভোগদখলে আছেন।
কিন্তু বিবাদী পক্ষ আলমগীর ঘরামী গং ১১/৬৮-১১৫৭৩নং খাইখালাশী দলিল মূলে দাবি করেন। মুলত বিবাদীরা মকদ্দমার বিরোধীয় সম্পত্তিতে কোন ভোগদখলে নাই। কিন্তু বাদীপক্ষ সাব-কবলা দলিল মূলে বহু পূর্বে হতে দখলে রয়েছে। কিন্তু বিবাদী কর্তৃক শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কা রয়েছে তার।
জসিম মোল্লা জমির সাব-কবলার প্রকৃত মালিক অভিযোগ করে বলেন এই জমি আমি ক্রয় করেছি আজ থেকে ১২বছর আগে জমি আমার দখলে আমি সেখানে বর্তমানে দু’টি গাভী,গোয়ালঘর,বসতঘর, নির্মিত রয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন আগে ভূমিদস্যু আলমগীর জমি তার দাবী করে মুলাদী থানায় একটি মিথ্যা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এরপর আমি ফৌজদারি আইনে আদালতে মামলা করি। মামলার সত্যতা জানতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলাদী, ও মুলাদী থানা পুলিশ সরেজমিনে এসে তাদের এবং আমার কাগজপত্রে ও দলিল দেখে যাচাই-বাছাই করে সহকারী কমিশনার ভূমি, রিপোর্ট দিলে তারা সেটি না মেনে আজ ভোর রাতে আনুমানিক ৫০জন কোতয়ালী থানাধীন কামারপাড়া থেকে ভাড়াটে লোকজন এনে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ ও আমার বেশ কিছু গাছ কেটে নিয়েছে। আমরা বাঁধা দিতে সাহস পাইনি কারণ তাদের হাতে ধারালো রামদা ও বাংলা-দা ছিলো এবং আমার বাড়ির আশপাশে রামদা ও বাংলা-দা নিয়ে মহড়া দিচ্ছিলো এবং জমিতে থাকা নারাপালায় (গাভীর খাবার) আগুন দেওয়ার চেষ্টা চালালে তখন আমি চিৎকার চেচামেচি করলে এলাকার লোকজন তাদেরকে ধাওয়া দিলে ভাড়াটিয়ারা জব্বারের ঘরে লুকিয়ে পরেন কিন্তু আলমগীর গং’রা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের’কে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়’নি।
পরে সকালে পুলিশ এসে ঘর নির্মাণ ও গাছ কাটার জন্য বাঁধা দেয়। তবে পুলিশ ভারাটিয়াদের গ্রেফতার না করে শাসিয়ে যায়। ভূমিদস্যু আলমগীর এর আগেও বেশ ক’জনার জমি মিথ্যা মামলা দিয়ে ভাড়াটে লোকজন এনে অন্যের জমি ভোগদখলে রেখেছে। এবং তার ছেলে পুলিশ হওয়া এলাকার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাখে। তাই তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। তার ছেলে পুলিশের কনস্টেবল নুর ইসলাম পটুয়াখালী পুলিশ লাইনে কর্মরত আছেন। তবে বছরে ৪/৫ মাস মিথ্যা অসুস্থ দেখিয়ে বাড়িতেই থাকেন। কিন্তু এলাকায় বলে বেড়ায় পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার তার খুব ঘনিষ্ঠজন তাই তাকে বলেই বাড়িতে থাকেন।
অভিযোগের বিষয়ে আলমগীর ও জব্বারের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তারা কোন জবাব না দিয়ে বলেন আমরা এসিল্যান্ডের রিপোর্ট মানি না। কারণ তিনি একতরফা রিপোর্ট দিয়েছেন। আমরা কাগজপত্র বুঝতে চাইনা। আমরা আমাদের জমি জোরপূর্বক দখলে করে নিয়েছি। পারলে কেউ কিছু আমাদের করুক।
এবিষয়ে মুলাদী থানার ওসি তদন্ত সমির কুমার দাস সাংবাদিকদের জানান, আমি বিষয়টি শুনেছেন তবে এখনি কিছু বলতে পারছি না। ঘটনাস্থলে সাব-ইন্সপেক্টর হুমায়ুনকে পাঠিয়েছি তিনি আসলে পুরো বিষয়টি আপনাদের জানতে পারবো।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী এসআই হুমায়ুন সাংবাদিকদের জানান, আদালতের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক ঘর করে আলমগীর অন্যায় করেছে। তবে দুপক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছে। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে কাগজপত্র দেখে মিল মীমাংসা বা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।