স্টাফ রিপোর্টার: ২২ দিন আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন নাদিম হোসেন ফকির। এখনো মেহেদির রঙ মোছেনি হাত থেকে। স্বপ্ন ছিল উচ্চশিক্ষার। সংসার চালাতে একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন তিনি। কিন্তু বেপরোয়া একটি প্রাইভেট কার তার সব শেষ করে দিল। প্রাইভেট কারচাপায় মৃত্যু হয়েছে তার।
বুধবার (১৬ মার্চ) বিকেলে বরিশাল নগরীর সরকারি ব্রজমোহন কলেজ রোডের বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত নাদিম হোসেন ফকির সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিল্ববাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা মনিরুল ইসলাম আশ্রাব একজন প্রবাসী। পরিবারের বড় সন্তান নাদিম সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি ইন্টারনেট প্রোভাইডার কোম্পানি ইউরোটেল বিডি অনলাইন লিমিটেডে টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাদিমের অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ। বিকেল ৫টার দিকে পরীক্ষা শেষে নিজ মোটরসাইকেল যোগে ক্যাম্পাস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। বিএম কলেজ সংলগ্ন বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে পৌঁছানো মাত্রই বেপরোয়া গতির একটি প্রাইভেট কার নাদিমের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে মোটরসাইকেল নিয়ে ছিটকে রাস্তায় ওপর পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ এবং স্থানীয়রা নাদিমকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্ব চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নাদিমের ছোট ভাই নাজমুল ফকির বলেন, বাবা সৌদি থাকেন। আমরা দুই ভাই-বোন। মা এবং ভাবিসহ বরিশালে থাকি। আমরা কী করবো কিছু বুঝতে পারছি না। আমরা অসহায় হয়ে গেলাম।
ইউরোটেল বিডি অনলাইন লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার এনামুল হক বলেন, নাদিম আমাদের খুব কাছের একজন সহকর্মী। সে ইউরোটেলকে অনেক কিছু দিয়েছে। তার এমন মৃত্যু আমাদের কাম্য ছিল না। আমরা তার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আকরামুজ্জামান বলেন, প্রাইভেট কার বা চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।