দক্ষিণাঞ্চল ডেস্কঃ বাংলাদেশী এক ইউক্রেন প্রবাসী নূরুল আমিন শাকিল বলেন, ভাই আমি সবার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিয়েছি। আপনিও আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন কোনো ভুল করলে হয়তো । মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে যাচ্ছে, চরম আতঙ্কের আমরা, অনেকটা বিমর্ষ আর কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরীর নওদাপাড়া এলাকায়। বছর খানেক আগে পড়া-শোনার জন্য তিনি ইউক্রেন যান। এর পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বসবাস করছিলেন তিনি। কিন্তু কিয়েভে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বোম্বিং শুরু করে রাশিয়া। এর পর আতঙ্কে কিয়েভের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি শাকিলও ঘর ছেড়ে গাড়িতে উঠে পালাতে শুরু করেন।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ছয়টার দিকে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা শাকিলের। তখন কিয়েভে দুপুর দুইটা। শাকিল জানান, তাঁরা কিয়েভ শহর ছেড়ে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলের শহরের দিকে পোল্যান্ড সীমান্তের দিকে আশ্রয়ের খোঁজে রওনা দিয়েছেন। কিন্তু পথে গাড়ির চাপে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে তাঁদের বহনকৃত গাড়ীও খুব জোরে এগুতে পারছে না। সবাই পালাচ্ছে যে যার মতো যানবাহনে চড়ে।
রাশিয়ান বাহিনী যেভাবে হামলা করছে, তাতে রাস্তায় যানবাহনের ওপরও যে কোনো সময় বোমার আঘাত হানতে পারে। এই আতঙ্কে আতঙ্কিত শাকিল। তাঁর মতো ৫ শতাধিক বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ইউক্রেনে আটকা পড়েছে বলেও দাবি করেন শাকিল। আর সবমিলিয়ে প্রায় ১৫শ বাঙ্গালী থাকেন ইউক্রেনে। তারা সবাই আটকা পড়েছে। অনেকেই রেড জোনে আটকা পড়েছেন। তারা আর বের হতে পারছে না।
শাকিল বলেন, ‘আমারা তিন ঘন্টা ধরে শহরের মধ্যেই আটকা পড়ে আছি। যানজটের কারণে গাড়ি বের হতে পারছে না। ‘ভারতসহ অন্যান্য দেশের নাগরীকদের সে দেশের এ্যাম্বাসী আগেই সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। কিন্তু বাংলাদেশের পোল্যান্ড এ্যাম্বাসী এটি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। শেষে যখন এ্যাম্বাসী থেকে ঘোষণা আসে যে ১৫ দিনের জন্য পোল্যান্ড স্টে ভিসা দিবে, তখন আর আমাদের এখান থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।
কারণ ইউক্রেনের খারকিভসহ কয়েকটি শহরে বুধবার রাত ১২ টা থেকে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়। এখন চারিদিকে থমথমে অবস্থা। শহরের ফটকে ফটকে রাশিয়ান সোনারা তল্লাসি চৌকি বসিয়েছে বলে শুনেছি। তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।’ আমরা বের হতে পারছি না। ফলে আমরা চরম আতঙ্কে আছি।’