দক্ষিণাঞ্চল ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি লটারির ফলাফলের তালিকায় এক শিক্ষার্থীর নাম (৮) আটবার এসেছে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে শহরের গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের গেটে ঝুলিয়ে দেওয়া ফলাফল শিট থেকে এমন তথ্য জানা যায়৷ এ নিয়ে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা প্রতিবাদ জানান।
গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলে গিয়ে জানা যায়, সারাদেশের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১৪১ শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন নেওয়া হয়। অনলাইনে শিক্ষার্থীরা আবেদন করার পর সোমবার লটারির মাধ্যমে বাছাই করা হয়। ওইদিন বিকেলে স্কুলের গেটে লটারিতে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের তালিকা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
সেখানে দেখা যায়, তাহিয়া নামে এক শিক্ষার্থীর নাম (৮)আটবার লটারিতে বাছাইয়ের তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বাবা-মা ও মোবাইল নম্বর একই লেখা থাকলেও আবেদনের ইউজার আইডি নম্বর ভিন্ন ভিন্ন লেখা আছে। তালিকায় ১৩, ১৭, ২৪, ৩২, ৩৬, ৬৬, ৯৮ ও ১১৬ নম্বরে তাহিয়ার নাম এবং ছবি দেওয়া রয়েছে।
একই শিক্ষার্থীর নাম লটারিতে(৮) আটবার থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন লটারিতে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। তারা অভিযোগ করেন, এখানে নিশ্চিত অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। একই ইউজার আইডি, নাম, পরিচয় হলে বুঝতে পারতাম ভুলে এসেছে। কিন্তু একই শিক্ষার্থী আলাদা আটবার কীভাবে আবেদন করে ইউজার আইডি পেল, সে প্রশ্ন করেছেন অভিভাবকরা।
বিনয় ঘোষ নামে এক অভিভাবক বলেন, আমি আমার মেয়ের ভর্তির ফলাফল দেখতে এসেছিলাম। এসে দেখলাম আমার মেয়েসহ শতশত মেয়ে লটারিতে বাদ পড়েছে। কিন্তু এমন মেয়ে দেখলাম, তার নাম সাত/আটবার এসেছে তালিকায়। এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আন্তরিকভাবে খুশি হবো।
আরেক অভিভাবক বলেন, একই বাচ্চা সাত/আট বার পেয়ে গেল। আর একজন একবারও না। এখানে অন্য বাচ্চারা সুযোগ পেতে পারতো।
এ বিষয়ে গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারভীন আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি কীভাবে ঘটলো আমি বলতে পারবো না। সম্পূর্ণ বিষয়টি অনলাইনে হয়ে থাকে ঢাকা থেকে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জুলফিকার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানাতে তাকে বলেছি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. জিয়াউল হক মীর সাংবাদিকদের বলেন, এক শিক্ষার্থীর নাম আটবার আসার বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোবাইল ফোনে আমাকে জানিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে কিছুই করা হয় না। অনলাইনে লটারির বিষয় পুরোটা ঢাকা থেকে দেখা হয়। সেখানেও বদল করার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষার্থীর নাম আটবার আসলেও, সে একবারই ভর্তি হতে পারবে। বাকিগুলো ওয়েটিং লিস্ট থেকে পূর্ণ করা হবে। আর একজন শিক্ষার্থী কীভাবে এতগুলো ইউজার আইডি ব্যবহার করলো, তা শিক্ষা অধিদপ্তর ভালো বলতে পারবে।